ঘরের দরজা ও জানালা পরিষ্কার করার কিছু কার্যকরী টিপস নিয়ে আমাদের আজকের এই লেখা। ঘর ছোট বা বড় ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে ঘর পরিষ্কার রাখা অনেক জরুরি। পরিষ্কার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘরে দরজা এবং জানালা পরিষ্কার রাখার জন্য আমরা নানান ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকি, কিন্তু অনেক সময় পরিষ্কার করার পরেও আমাদের মনের মতো হয় না।
তাই আমাদের আজকের এই ব্লগ লেখা। এই ব্লগের মাধ্যমে ঘরের দরজা ও জানালা পরিষ্কার করার কিছু কার্যকরী টিপস গুলো শেয়ার করবো। আর টিপস গুলো কাজে লাগিয়ে আপনারা আপনাদের ঘরের দরজা ও জানালা পরিষ্কার করতে পারবেন মনের মতো করে।
ঝরা পাতা আর রুক্ষ আবহাওয়ার দিনে আমাদের কে বারবার ঘরের দরজা জানালা বারবার পরিষ্কার করতে হয়। এ সময় ঘর পরিষ্কার করতে না করতেই আবার ময়লা হয়ে যায়। যদিও ঘরের দরজা জানালার কারণে ঘরের ভিতরে ধুলোবালির মতো ময়লা প্রবেশ করতে পারে না। তবুও দরজা জানালা খোলা অবস্থায় থাকলে বা এর ফাঁক দিয়ে ময়লা প্রবেশ করে। অনেক সময় দরজা এবং জানালায় ধুলো ময়লা আটকে থাকে।
এগুলো কিছু দিন পর পর পরিষ্কার করতে হয়। নয়তো এগুলো ভিতরে প্রবেশ করে। তাই নির্দিষ্ট সময় পর পর দরজা জানালা পরিষ্কার করতে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ম্যাটারিয়াল ভেদে বিভিন্ন ভাবে দরজা জানালা পরিষ্কার করতে হয়। আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে আপনাদের সামনে এসব তথ্য তুলে ধরবো। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
Contents
ঘরের দরজা জানালা সহ ঘর পরিষ্কার রাখার পর কোথাও কোনো দাগ থাকবে না, শহুরের জীবনে চাইলেও এমনটা সম্ভব হয় না বা বাসা এমনভাবে পরিষ্কার রাখা যায় না। বাড়িতে সহায়তা করার জন্য কেউ না থাকলে অফিস থেকে ফিরে এসব কাজ করাও সম্ভব হয়ে ওঠে না। তবে কিছু সহজ উপায় জানা থাকলে কিন্তু এসব কাজ অনেক সহজেই করা সম্ভব। আর তাই আজকের এই ব্লগের মাধ্যমে ঘরের দরজা ও জানালা পরিষ্কার করার কিছু কার্যকরী টিপস গুলো।
ঘরের দরজা জানালা ইত্যাদি পরিষ্কারের আগে আমাদের কে জেনে নিতে হবে পরিষ্কার করার সরঞ্জাম, সঠিক উপায়, সঠিক সময় ইত্যাদি সম্পর্কে। আর এ সকল বিষয় নিয়েই আমাদের আজকের ব্লগ। চলুন এবার শুরু করা যাক।
পরিষ্কার করার আগে পরিষ্কার করার সঠিক সময় সম্পর্কে জানা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অসময়ে পরিষ্কার করার পর দেখা যাবে যে, দ্রুত সময়ের ব্যবধানে আবার ময়লা হয়ে যাবে। তাই নির্দিষ্ট সময়েই পরিষ্কার করতে হবে। কড়া রোদ যে সময়ে দরজা বা জানালায় এসে পড়বে এবং যে কোনো ক্লিনিং সল্যুশন বা পানি সহজেই শুকিয়ে যাবে। তাই যখন রোদের তাপ কমে যাবে তখন দরজা বা জানালা পরিষ্কার করা উত্তম। এছাড়াও ঠান্ডাকালে যে কোনো সময়ে ঘরের দরজা বা জানালা অথবা ঘর পরিষ্কার করা যাবে।
সঠিক উপায়ে পরিষ্কার কার্যকলাপের জন্য সঠিক সরঞ্জাম বা ম্যাটারিয়াল বেছে নেওয়া অনেক জরুরি। পরিষ্কার করার জন্য কি ধরনের কাপড় ব্যবহার করবেন তা যাচাই করে নেওয়াই ভালো। অনেক সময় দেখা যেয় যে, জানালার কাঁচে দাগ লেগে থাকে। এই বিষয় গুলো এড়িয়ে চলার জন্যই মূলত পরিষ্কার করার আগে সঠিক সরঞ্জাম বেছে নিতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।
সুতির পুরনো কাপড় ব্যবহার করা যাবে না। প্রয়োজনে মাইক্রফাইবার কাপড় ব্যবহার করতে হবে। অথবা যে স্পঞ্জ টি ব্যবহার করছেন সেটি পুরনো কিনা খেয়াল রাখতে হবে। আপনি চাইলে খবরের ব্যবহার করতে পারবেন। কেননা খবরের কাগজ দিয়েও পরিষ্কার করা যায়। ব্যবহার করা স্প্রে টির মেয়াদ আছে কিনা যাচাই করে নিতে হবে। পরিষ্কার কাজ করার জন্য টুল বা সরঞ্জাম ঠিক থাকলে কাজটি অনেক সহজেই হয়ে যাবে।
জানালার ময়লা পরিষ্কার করার জন্য ভিনেগার অনেক কার্যকরী। বিশেষ করে কাচের দরজা বা জানালার ক্ষেত্রে। যে কোনো ধরনের কাচ অথবা থাই দরজা ও জানালা পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজন হবে পানিতে ভেজানো এক টুকরা স্পঞ্জ বা ফোম। পানির সাথে অবশ্যই সামান্য পরিমাণে ভিনেগার অথবা অ্যামোনিয়া মিশিয়ে নিতে হবে।
এরপর পুরনো পত্রিকা, স্পঞ্জ বা ফোম ব্যবহার করে পানি দিয়ে দরজা বা জানালা পরিষ্কার করুন। এতে করে দ্রুত দরজা বা জানালার ময়লা পরিষ্কার হয়ে আসবে। জানালার কাচের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে ব্যবহার করতে পারেন সাদা ভিনেগার।
গভীর ভাবে ময়লা পরিষ্কার করতে বেকিং সোডার গুরুত্ব অপরিসীম। পানির সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে প্রলেপ আকারে তৈরি করে ময়লা স্থানে লাগিয়ে রাখার মাধ্যমে সহজেই যে কোনো ময়লা পরিষ্কার করা যায়। গ্লাসের তৈরি দরজার ক্ষেত্রে এটি বেশি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কেননা জটিলতম দাগ তুলতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
প্রায় সব রকমের দাগ মুছে ফেলতে এই পদ্ধতি দারুণ কার্যকরী। তবে, আপনি যদি মনে করে এই ব্যবহার করা ঠিক হবে না তাহলে এড়িয়ে যেতে পারেন। এতে নতুন করে দাগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
আপনি যদি ভিনেগার ব্যবহারে সন্তুষ্ট না হন বা ভিনেগার ব্যবহার করতে না চান তাহলে আপনি ব্ল্যাক টি ব্যবহার করতে পারেন। ব্ল্যাক টি তে থাকা ট্যানিক এসিডের ফলে সহজেই ময়লা পরিষ্কার হয়ে আসে। দরজা জানালা পরিষ্কার করতে চায়ের মতো করেই টি ব্যাগ গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর কিছুটা সময় অপেক্ষা করুন এবং পানিটি ঠাণ্ডা করে নিন।
ঠাণ্ডা হয়ে গেলে স্পঞ্জ, ফোম অথবা কাপড় পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে ময়লা স্থানে ঘষতে থাকুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আপনি উজ্জ্বলতা দেখতে পারবেন। গ্লাস অথবা আয়না পরিষ্কার করতেও আপনি এটি ব্যবহার করতে পারেন।
জানালার ট্র্যাক পরিষ্কার করা একটি ঝামেলার ব্যাপার। এছাড়া এই ট্র্যাক গুলোতে জানালার ময়লা জমে থাকার কারণে দ্রুত ময়লা হয়ে থাকে। আর ট্র্যাক গুলো ছোট ছোট হওয়ার কারণে হাত দিয়ে সঠিকভাবে পরিষ্কার ও করা যায় না। তাই এগুলো পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে কিছু পরিমাণে বেকিং সোডা জানালার ট্র্যাকে ছিটিয়ে রাখুন এবং কয়েক ফোটা ভিনেগার ঢেলে দিন।
এবার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর কটনবাড বা ফোমের ছোট টুকরো দিয়ে পরিষ্কার করুন। আপনি দেখতে পারবেন যে, এই ময়লা গুলো খুব সহজেই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে৷
এতক্ষন আমরা বিভিন্ন লিকুইড ব্যবহার করে দরজা জানালা পরিষ্কার করার টিপস গুলো দেখলাম। চলুন এবার দেখে নেয়া যাক কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে দরজা ও জানালার ময়লা পরিষ্কার করা যাবে।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে আপনি চাইলে হালকা গরম পানিতে শ্যাম্পু মিশিয়ে দরজা ও জানালার ময়লা পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে সেই পানি ব্যবহার করতে পারেন। তবে দরজা ও জানালা যদি কাঠের তৈরি হয় সেক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে, কাঠে যেনো পানি না লেগে থাকে। কাঠের উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনতে আপনি অলিভ অয়েল ও লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন।
এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে ঘরের দরজা ও জানালা পরিষ্কার করার কিছু কার্যকরী টিপস গুলো শেয়ার করেছি। আমরা আশাবাদী যে এই টিপস গুলো আপনাকে যথেষ্ট সাহায্য করবে দরজা ও জানালার ময়লা পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে।
আমাদের এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা নিয়মিত ঘর বাড়ি সম্পর্কিত বিভিন্ন আর্টিকেল পাবলিশ করে যাচ্ছি। আশা করি আমাদের এই ব্লগ টি আপনাদের পছন্দ হবে।
December 22, 2022