টাইলস ফ্লোর পরিষ্কারের টিপস গুলো নিয়েই আমাদের আজকের আয়োজন। টাইলস করা ঘরের মেঝে ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়। কিন্তু, মেঝেতে টাইলস করা থাকলে সেটি সময়মত পরিষ্কার করতে হয়। সময়মত পরিষ্কারের অভাবে টাইলস কিছুটা হলদে হয়ে যায় এবং দেখতে কিছুটা খারাপ লাগে।
টাইলস করা মেঝে কিছুদিন অন্তর অন্তর পরিষ্কার না করলে এর সৌন্দর্য ধরে রাখা সম্ভব হয় না। তাই অবশ্যই এর সৌন্দর্য ধরে রাখতে আপনাকে কিছুটা পরিশ্রম করতে হবে। আজকের এই ব্লগ পোস্ট এর মাধ্যমে আমরা আপনার সাথে শেয়ার করবো টাইলস ফ্লোর পরিষ্কারের টিপস সম্পর্কে।
Contents
টাইলস করা ফ্লোর অন্যান্য উপকরণের তৈরিকৃত ফ্লোর অপেক্ষা অনেকটা সুন্দর হয়ে থাকে। টাইলস করা ফ্লোর আমাদের সবারই পছন্দ কিন্তু, টাইলস করা ফ্লোরের সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য আমাদের নানান ধরনের অবহেলা।
যদিও টাইলস করা ফ্লোর বেশ মজুবুত থাকে কিন্তু এমন ও কিছু টাইলস রয়েছে যা কিনা অনেক যত্ন সহকারে পরিষ্কার করতে হয়। তাই ঘরের মেঝে বুঝে তারপর সেটি পরিষ্কার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। টাইলস ফ্লোর পরিষ্কার করার টিপস সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগে চলুন জেনে নেওয়া যাক টাইলস করা ফ্লোরের কিছু সুবিধা সম্পর্কে।
এতক্ষণ আপনারা সহজেই বুঝতে পেরেছেন টাইলসের সুবিধা সম্পর্কে। চলুন এবার জেনে নিন টাইলস করা ফ্লোর পরিষ্কার করার টিপসগুলো।
সাদা বা হালকা রঙের টাইলস গুলো খুব বেশি সময় ধরে চমক ধরে রাখতে পারেনা। তাই, কিছুদিন পর পর টাইলস পরিষ্কার করতে হয়। আর অনেকেই রয়েছেন যারা টাইলস পরিষ্কার করার সঠিক নিয়ম জানেন না বা কিভাবে টাইলস পরিষ্কার করলে দ্রুত এবং সহজেই ময়লা পরিষ্কার করা যাবে। সেই বিষয়ে অভিজ্ঞ নন। চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক কিভাবে টাইলস পরিষ্কার করা যেতে পারে।
পদ্ধতি ১: প্রথমে একটি মাঝারি সাইজের বালতি ভর্তি করে পানি নিয়ে নিতে হবে। এবার পানির পরিমাণের তুলনায় চার ভাগের ১ ভাগ সমপরিমাণে এমোনিয়া মিশিয়ে নিতে হবে। এবার ঐ পানিতে কাপড় ভালো করে ভিজিয়ে নেবার পর। সেই কাপড় টি দিয়ে ভালোভাবে টাইলস গুলো মুছে নিতে হবে। দাগ ও ময়লা দূর করতে এমোনিয়া দারুণ কার্যকরী। এছাড়া হলদে দাগ তুলতেও এমোনিয়া দারুণ কাজ করে।
পদ্ধতি ২: একই নিয়মে ব্যবহার করতে পারেন ব্লিচ। দাগ দূর করতে ব্লিচ ও বেশ কার্যকরী। একই নিয়মে চার ভাগের এক ভাগ ব্লিচ ও বাকি তিন ভাগ পানি দিয়ে মিশ্রণ বানিয়ে কাপড় -এর সাহায্যে ভিজিয়ে মুছতে হবে। তাহলেই দূর হবে ফ্লোরের ময়লা।
পদ্ধতি ৩: টাইলস যুক্ত ফ্লোরের কঠিন-তম দাগগুলো দূর করতে ব্যবহার করতে পারেন ভিনেগার। কঠিন-তম দাগ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতে ভিনেগার অনেক বেশি কার্যকরী। অনেকসময় ছোট বাচ্চারা ফ্লোরে খেলাধুলা করে। আপনারা চাইলে ফ্লোর পরিষ্কার করার জন্য ভিনেগার ব্যবহার করতে পারেন।
ভিনেগার দিয়ে ফ্লোর পরিষ্কার করার জন্য প্রথমে এক বালতি পানিতে এক কাপ এর অর্ধেক পরিমাণ ভিনেগার পানিতে মিশিয়ে নিয়ে ফ্লোর পরিষ্কার করতে হবে। এভাবে ৪-৫ দিন পরপর পরিষ্কার করলে ফ্লোরের ময়লা সহ বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়াও চলে যাবে।
পদ্ধতি ৪: টাইলসের দাগ দূর করণে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ব্যবহার করতে পারেন। জেদি দাগ তোলার জন্য এটি বেশ কার্যকরী উপায়। বোতলে ৫০ শতাংশ পরিমাণ পানি এবং ৫০ শতাংশ পরিমাণে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড নিয়ে দাগের উপর স্প্রে করতে হবে। তারপর ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। ত্রিশ মিনিট পর একটি কাপড়ের সাহায্য নিয়ে মুছে ফেললে সকল দাগ উঠে যাবে। এভাবে সহজেই আপনি ফ্লোরে থাকা দাগ দূর করতে পারবেন।
পদ্ধতি ৫: টাইলস ফ্লোরে থাকা জটিল বা কঠিন-তম দাগগুলো তুলে ফেলার জন্য বেকিং সোডার কোনো বিকল্প নেই। নানান কারণে টাইলস করা ফ্লোরে বিভিন্ন ধরনের দাগ থেকে যায়। যে দাগগুলো কখনো পরিষ্কার হতে চায় না পরবর্তী তে এই দাগগুলি চিরস্থায়ী দাগে পরিণত হয়।
সাধারণত এই ধরনের দাগগুলি সহজে তোলা যায় না বা পরিষ্কার হয় না। তবে বেকিং সোডার সাহায্যে এই সমস্ত দাগ খুব সহজেই তোলা সম্ভব।
এসবই ছিল সাধারণ টাইলস গুলো পরিষ্কার করার কিছু সহজ এবং সর্বোত্তম উপায়। তবে এমন ও কিছু টাইলস দারা তৈরি ফ্লোর রয়েছে। যা পরিষ্কার বা পরিচর্যা করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। চলুন এবার জেনে নিন এমনই কিছু টাইলস করা ফ্লোর সম্পর্কে।
স্টোন বা পাথরের তৈরি ফ্লোর পরিষ্কার করার সময় অবশ্যই আপনাকে কিছুটা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। এ ধরনের ফ্লোর পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে আপনি যদি বাজারে বিকৃত হওয়া ক্লিনার ব্যবহার করেন তাহলে আপনি আপনার অজান্তেই টাইলসের ক্ষতি করে ফেলতে পারেন। কারণ এ ধরনের ক্লিনারে কিছুটা রাসায়নিক পদার্থের উপকরণ বিদ্যমান।
তাই এ ধরনের ফ্লোর গুলো পরিষ্কার করে পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি করা ক্লিনার ব্যবহার করতে হবে। অম্লীয় জাতীয় বৈশিষ্ট্য বিহীন লেবু বা ভিনেগার অথবা হালকা ডিটারজেন্ট পাউডার ব্যবহার করে পরিষ্কার করতে পারেন। এতে করে টাইলসের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
রিনোলিয়াম, ভিনাইল, কর্ক এবং রাবারের মতো কিছু উপকরণ দিয়ে তৈরি এই ধরনের টাইলস। এই টাইলস গুলো ব্যবহার করার জন্য বেশ সুবিধাজনক এবং রক্ষণাবেক্ষণ করাও অনেকটা সুবিধার।
ভিনাইল ক্লিনিং সলিউশন সহজেই বাজারে পাওয়া যায়। এটি ব্যবহার করে এ ধরনের টাইলস গুলো সহজেই রক্ষণাবেক্ষণ করা যায়। তবে মনে রাখতে হবে যে, ভিনাইল করা টাইলসে কখনো ঘষাঘষি বা ঝাড়ু বা কোনো টুলস ব্যবহার করা যাবে না। এতে টাইলসের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাবে। টাইলস হালকা পরিষ্কার করার পর ভিনাইলের সাথে কিছুটা পানি মিশিয়ে ফ্লোর ধুয়ে নিতে হবে। ধোয়া হয়ে গেলে শুকিয়ে নিতে হবে।
এক বালতি পানিতে অল্প পরিমাণে ডিশ ওয়াশিং সোপ মিশিয়ে নিয়ে এই মিশ্রণটি দিয়ে টাইলসের ফ্লোর মুছে নিন। এই মিশ্রণটি দারা ফ্লোর মুছে একটি স্পঞ্জ দিয়ে মুছে ফেলুন। এটি করার গলে আপনি আপনার বর্তমান টাইলস এবং পরিষ্কার করার আগে টাইলসের মধ্যকার পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা টাইলস করা ফ্লোর সম্পর্কে কিছু ধারণা এবং টাইলস করা ফ্লোরের সুবিধা সহ টাইলস পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি আলোচনা করেছি। আশা করি আপনারা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে টাইলস করা ফ্লোরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এবং এর কার্যক্ষমতা ধরে রাখার জন্য টাইলস পরিষ্কারের সকল টিপস গুলো আয়ত্ত করতে পেরেছেন।
এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা আপনাদের সাথে বিল্ডিং বা কাঠামো সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের খুঁটিনাটি নিয়ে নানান বিষয়ের উপর ব্লগ পাবলিশ করে যাচ্ছি। আশা করি আপনারা আমাদের এই ব্লগ টি পছন্দ করবেন।
November 25, 2022