the-balcony-PZAL4RL (1)

বসবাসের জন্য ঢাকার সেরা জায়গাগুলো

December 26, 2021

জীবিকা নির্বাহের যাবতীয় কার্যাদি থেকে শুরু করে সরকারি সকল কর্মকাণ্ড এবং নাগরিকের অধিক সুবিধা নিয়েই বাংলাদেশের মানুষ রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক। বরং অন্য দেশগুলোতে দেখা যায় রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন এবং প্রশাসনিক কার্যাদির জন্যই মানুষ রাজধানীকে বেছে নেয়।  রাজধানী ঢাকায় সর্বস্তরের লোকের মানুষের বসবাস রয়েছে। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত , নিম্নবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত  লোকে লোকারণ্য এই ভূমি। ১০৪ বর্গমাইলের এই ভূমিতে ২কোটি লোক বসবাস করে, প্রতিদিন এ সংখ্যার পরিমাণ বাড়ছে বৈ কমছেনা। জনগণ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথেসাথে এ সিটির আয়তন বেড়ে যাচ্ছে। আর নাগরিকের সুযোগ সুবিধা সব কিছুর সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি ছাড়া কমছেনা।১ ঠিক এজন্য ঢাকা হয়ে উঠছে বিশ্বের অন্যতম জনবহুল এলাকা।

           আভিজাত এলাকাসমূহ :
           আভিজাত শব্দটি আক্ষরিক অর্থে সাধারণ হলেও এটি আসলে অসাধারণ তথা উৎকৃষ্টতাকেই বোঝানো হয়ে থাকে। মূলত আভিজাত এলাকা বলতে বিলাসবহুল এলাকাই মুখ্য এখানে।  প্রতিটি দেশ বা শহরের এমন কিছু এলাকা বা অঞ্চল থাকে যেটি অন্যান্য স্থানের তুলনায় অধিক বাসযোগ্য এবং সুবিধাজনক।  আর ঠিক এসবের উপর ভিত্তি করেই ঢাকার কিছু এলাকার নাম উল্লেখ করা যেতে পারে, যা অধিক পরিমাণে বাসযোগ্য।

           ঢাকার আকর্ষণ :
           রাজধানী ঢাকার উন্নতি এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে আন্তর্জাতিক হোটেলসমূহের স্থান এই ভূমিতে, পাঁচতারা হোটেলের অবস্থান এর পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে পরিচিত অনেক হোটেলের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে শহরের নানা প্রান্তে। পারিবারিক বিনোদনের ক্ষেত্র হিসেবে অ্যামিউজমেন্ট একটি উল্লেখযোগ্য আকর্ষণীয় পার্ক। বিদেশি সংস্থার পাশাপাশি বিনিয়োগ কারিরাও এ দেশের প্রতি এবং এই শহরের প্রতি দিনের পর দিন আকৃষ্ট হচ্ছেন। এই ভূমি অর্থাৎ ঢাকা এশিয়ার বৃহৎ মহানগর অঞ্চল হিসেবে দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের নানাপ্রান্তের মানুষ রাজধানীর সুবিধা ভোগ করতে এবং দেশের হয়ে কাজ করতে আবাসিক এলাকাগুলোকে নিজেদের বাসস্থান বানিয়ে নিচ্ছে। স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করছে। এটি বসবাসের জন্য জনপ্রিয় ও শান্তির স্থান আর এখানে  ফ্লাট এবং এপার্টমেন্ট এর খোঁজ নিত্যদিনের ঘটনা।

             বসবাসের যোগ্য জায়গা বা উৎকৃষ্ট জায়গার জন্য যা যা দরকার :
★ প্রচুর গাছপালাসহ উন্মুক্ত স্থান থাকা জরুরি।
★ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
★ ভবনগুলির মাঝে নির্দিষ্ট দূরত্ব, যাতে নানা ধরণের সমস্যা মুক্ত থাকা যায়।
★ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা প্রয়োজনগুলোর মধ্যে অন্যতম প্রধান।
★ ভালোমানের বাসস্থান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
★ উন্নত মানের হাসপাতালের সুবিধা।
★ চাকুরীর ভালো সুবিধা বা ব্যবস্থা, বুটিক হাউজসহ বিবিধ ব্যবস্থা থাকা।
★ রেস্তোরা এবং হোটেল ব্যবস্থা।
★ কেনা এবং বেচার ভালোমানের সুবিধা অথবা ব্যবস্থা থাকা।
★ বিনোদন মূলক জায়গা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশের নিশ্চয়তা।
★ সরকারি এবং বেসরকারি  সুবিধা ভোগের ব্যবস্থা।
★ নাগরিকের আধুনিক সকল সুবিধাভোগ।
★ সাধ্যের মধ্যে স্বাদ গ্রহণের সুবিধা পাওয়া।
★ মসজিদ মন্দিরসহ পবিত্র স্থানগুলির সুন্দর ব্যবস্থা।

সুযোগ এবং সুবিধার বিবেচনায় বসবাসযোগ্য ঢাকার আকর্ষণীয় জায়গাগুলো :

            বনানী :
            বর্তমান বনানীকে বিলাসী মানুষদের বাসযোগ্য স্থান হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। এটি আবার ভোজনরসিক বা ভোজনবিলাসিদের শহর হিসেবেও বিবেচিত। ছায়াঘেরা এই আবাসিক এলাকা বাণিজ্যিক অঞ্চল হিসেবেও  পরিচিত আর উপরোক্ত কারণ গুলার জন্যই বনানী এতটা মূল্যবান সবার কাছে। অতিরিক্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন জিনিসের জন্য বনানীকে ঢাকার মডেল হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।
বনানীর উত্তর এবং পশ্চিমে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট,  দক্ষিণে মহাখালি, পূর্বে গুলশান অবস্থিত। চারপাশে আভিজাত্যপূর্ণ এলাকা বা অঞ্চল থাকাতে এ স্থানের মানুষের সব কিছুতেই পরবর্তন লক্ষ্য করা যায়। কথাবার্তা সহ সাধারণ বা নরমাল আচরণ লক্ষ্যণীয়। এটির একপাশে লেক অন্যপাশে নিরাপত্তায় পূর্ণ বনানী। এটির চারপাশ আভিজাত এলাকা নিয়ে গঠিত মাঝখানে ময়মনসিংহ হাইওয়ে, রেলপথ এবং অনেক উন্নত মানের রেস্টুরেন্ট।  বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক এলাকাসমূহের মধ্যে বনানী অন্যতম।  সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং তাৎপর্যের লক্ষ্যে বনানীকে সেরা হিসেবে বিবেচিত করা হয়। উন্নত বাসস্থান এবং উন্নত জীবনযাত্রার কারণে বারিধারাসহ অন্যান্য সকল যায়গা থেকে বনানীর ভাড়া কিছুটা বেশিই হয়ে থাকে। এই অঞ্চলটি আবাসিক বাসস্থানের জন্য যথেষ্ট উপযুক্ত।

           গুলশান :
           রাজধানী ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সব এলাকার মধ্যে গুলশান অন্যতম। এই এলাকার সৌন্দর্যে আর চমকপ্রদ সব কিছুতেই মানুষ বিভোর।  বিলাসবহুল এবং আভিজাত্যের আরেকনাম হলো গুলশান। সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের আবাস্থল, দামি রেস্তোরাঁ, সেরা বিনোদনের স্থান, হাতিরঝিলের পুলিশ প্লাজার মত সেরা সব শপিংমলের স্থান এই গুলশানে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক দিয়েও এটা পিছিয়ে নেই, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য প্রকাশ করেই এটি মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যগুলোর মধ্যে হৃদ অন্যতম যেটি গুলশান কে বারিধারা থেকে আলাদা করে রেখেছে। কোলাহলময় এই শহরে এক চিলতে শান্তির খোঁজে মানুষ যেখানে ছুটে সে সুন্দর আকর্ষণীয় জায়গাটি হলো গুলশান এবং গুলশানের সব সুন্দর এলাকা।

বিদেশীদের দূতাবাস হিসেবেও গুলশান পরিচিত। এটি প্রথমে মডেল কমিউনিটি হিসেবে গড়ে উঠে এবং পরবর্তিতে বিস্তৃত হয়ে আজকের গুলশানে রূপ নেয় যেখানে আভিজাত বুটিক মার্কেটসহ ২৫টির বেশি মসজিদ এবং গীর্জাসহ পবিত্রস্থান গুলো রয়েছে।

             ধানমন্ডি :
             ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা হিসেবে গড়ে উঠার সূচনা মূলত ১৯৫০ সালের দিকে। এটি আভিজাত্য  মানুষের আবাসিক স্থান হলেও পরবর্তিতে সকল স্তরের মানুষের বসবাসের যোগ্য হয়ে যায়। এই ভূমিতে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত নিয়ে কোন বাধ্যবাধকতা নাই। যে যার মত বসবাস করে যাচ্ছে। আবাসিক এলাকা গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম আবাসিক স্থান। আবাসিক এলাকা হিসেবে এখানে থাকার সুবিধার অন্ত নাই।

এই ভূমি আবাসিক এবং বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠে এবং ঢাকার শীর্ষ স্থানগুলোর একটি হিসেবে পরিণত হয়েছে। ধানমন্ডি লেকের আশেপাশের পরিবেশ অসাধারণ। আর অসাধারণতা আরো বেশি প্রকাশ পায় এই ভূমির ভবন গুলোর মাধ্যমে। একটির চেয়ে আরেকটি ভবনের সৌন্দর্য যেন উপচে পড়ছে। নান্দনিক এই ভবনগুলোই মানুষদের টেনে নেয় তাদের দিকে।

রাজধানীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যে অঞ্চলে দেখা যায় সেটি হলো ধানমন্ডি।  উচ্চমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাথে সাথে সুচিকিৎসার ব্যবস্থাও বিদ্যমান। এই এলাকায় ১০০টির ও বেশি হসপিটাল রয়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকেও সাধারণ মানুষ সেখানে যায় সুচিকিৎসার লক্ষ্যে। এই ভূমি খাবারের ক্ষেত্রেও নাম ধরে রেখেছে সকল উচ্চমানের খাবারের রেস্তোরাঁ এই অঞ্চলেই।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পূর্ণ এই ভূমির সৌন্দর্য ধরে রাখার আরেকটি মাধ্যম হলো ধানমন্ডি লেক। যে লেক’টি বিনোদনের স্থান হিসেবেও বিবেচিত। সকল স্তরের মানুষের নিঃশ্বাস নেবার স্থান, বড় থেকে ছোট, ধনী থেকে গরিব সবাই সেখানে যায় প্রশান্তি পাওয়ার লক্ষ্যে। সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান গুলোর মধ্যে ধানমন্ডি লেক সেরার সেরা হিসেবে রয়েছে।

          বারিধারা :
         গুলশানের নিকটবর্তী একটি স্থান বারিধারা, চমৎকার আবাসিক এলাকা গুলোর মধ্যে বারিধারা অন্যতম। এখানের ফ্লাটগুলো ৪টি বেডরুম এবং একটি লিভিংরুম নিয়ে গঠিত হয়ে থাকে যাতে একটি পরিবার খুব সুন্দরভাবে  বসবাস করতে পারে। এই ভূমির মানুষগণ প্রতিবেশি হিসেবেও চমৎকার। তারা প্রতিবেশি হিসেবে দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ভদ্রতা এবং মার্জিত ব্যবহার দিয়ে। সকল ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে চমৎকার এক স্থান এই বারিধারা। এখানে ইংরেজি মিডিয়াম তথা আমেরিকান স্কুল অব ঢাকা অবস্থিত যেটি সেরা স্কুল গুলার অন্যতম। আর এই স্কুলটি যুক্তরাষ্ট্রের যেকোন প্রিপারেটর স্কুলের সমকক্ষ।  কূটনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি হলো বারিধারা।

মার্কিন দূতাবাস, জাপানের দূতাবাস এবং কানাডার দূতাবাসসহ অনেক অনেক দেশের দূতাবাসের স্থান হলো এই বারিধারা। এটি আভিজাত্য পূর্ণ এক এলাকা, আভিজাত্যের প্রমাণ স্বরূপ ইউনাইটেড হসপিটাল এক উল্লেখযোগ্য প্রমাণ।

তাছাড়াও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই বাংলার সৌন্দর্য মণ্ডিত একটা স্থানের মধ্যে বারিধারা অন্যতম। বারিধারার হৃদ সবার হৃদয়ে প্রশান্তির বাতাস প্রভাবিত করতে পারে। মানুষ সেখানে যায় জঞ্জালপূর্ণ এই শহর থেকে একটু প্রশান্তি নিতে। প্রশান্তির বাতাস নিজের গায়ে লাগাতে। নিত্যনৈমিত্তিক জীবনের একঘেয়েমি দূর করতে বারিধারা হৃদের ভূমিকা কম নয়। মানবজীবনে প্রাকৃতিক হাতছানির বড় প্রয়োজন,  আর ঢাকার মত এমন জায়গাগুলোতে কোলাহলমুক্ত প্রশান্তি পাওয়া যায় এই জায়গা গুলোতে যেয়েই।
আর এসব কিছুর স্থান থাকাতেই এই অঞ্চল বসবাসের জন্য উপযোগি এবং গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমি। এখানে বসবাসরত স্থানীয়দের সুযোগ সুবিধা বেশি। আর তাই এখানে স্বাচ্ছন্দ্যভাবে বসবাস সম্ভব।

           উত্তরা :
           রাজধানী  ঢাকার আরেক শহর হিসেবে উত্তরাকে ধরা হয়। এটি যানজট থেকে দূরে নিরিবিলি এক স্থান। ১৯৮০ ১৯৯০ এর দশকে বাংলাদেশ সরকার এ স্থান টি গড়ে তোলেন সাধারণ মানুষদের বসবাসের উপযোগি করে। এটি এমন এক চমৎকার আবাসিক এলাকা যেটি ধূলামুক্ত এবং দূষিত বাতাসমুক্ত।  চমৎকার আবহাওয়া এতে বিরাজ করে সর্বক্ষণ। সেই সাথে এক অনাবিল শান্তি এবং সৌন্দর্যের প্রতিক এই উত্তরা। 

আবাসিক এলাকার সব সুবিধা ছাড়াও এটির রয়েছে আরো সব চমৎকার সুযোগ সুবিধা। ঢাকার এই খোলামেলা বায়ু দূষণ মুক্ত এই অঞ্চল স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, অনেক ধরণের বিপনী এবং শপিংমলের উত্তম জায়গা হয়ে উঠছে।  বড় বড় সারিসারি মার্কেট কমপ্লেক্স সমূহ এই জায়গার সুবিধা ব্যবস্থা আরো বাড়িয়ে দেয়।

উত্তরা হলো প্রশস্ত এবং সমৃদ্ধ এক শহর, অবকাঠামোগত দিক থেকে অন্যান্য শহর থেকে অনেক গুণ বেশি এগিয়ে। ঢাকা পূর্বাচলে স্থানান্তরিত হবে খুব দ্রুতই আর পূর্বাচল থেকে উত্তরার দূরত্ব খুবই কম। উত্তরার আবাসিক এলাকার মানুষদের জন্য আরো সুখকর খবর এই যে মেট্রোরেল ব্যবস্থা প্রস্তুত হয়েছে শুধু চালু হওয়ার অপেক্ষায় এবার।

শহরটি বিমান বন্দরের কাছে হওয়ায় এখানের পরিবেশ অত্যাধিক সুন্দর এবং বিদেশী দের বসবাসযোগ্য এক এলাকা এটি। যেমনি ভাবে সাজানো গুছানো পরিবেশ সবার মন কাড়ে তেমনি ভাবে উত্তরার রাস্তাঘাটের সৌন্দর্য ও মানুষের মন কেড়ে নেয়।

এই শহরতলী তাদের জন্যই যারা শহর থেকে একটু দূরে, কোলাহল থেকে মুক্ত হয়ে শান্তিতে বাস করতে চায়। আর ঠিক এজন্যই এটির সৃষ্টি। মহানগর এলাকায় সর্বধরণের চাপ বেড়ে যাওয়াতে এই শহরতলীতে স্কুল, কলেজ এবং মার্কেটসহ নানাবিধ প্রয়োজনীয় সব কিছুর সৃষ্টি এখন উত্তরাতেই।

ক্রমবর্ধমান এই শহরটি খুব দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মানুষদের নিকটে। বিমানবন্দর এর নিকটের এই শহর টি ঘুরতে আসা মানুষদের জন্য প্রিয় এক জায়গা। বাসিন্দাদের মন সতেজ রাখতে প্রতি সেক্টরেই বাগানের ব্যবস্থা রয়েছে যেটি উন্নত জীবনের মানুষদের এক বিরাট প্রয়োজনীয় অংশ। সুন্দরভাবে সাজানো গোছানো এই বাগান দেখতে এবং শান্তির হাওয়া গ্রহণ করতে এখানে ভীড় জমায় প্রচুর মানুষ।

বসবাসের মত উৎকৃষ্ট হওয়ার কারণেই এটি বসবাসের অঞ্চল সমূহের মধ্যে সেরা একটি অঞ্চল, যেখানে মানুষ নির্দ্বিধায় বসবাস করতে পারে, শান্তিতে এবং কোলাহল মুক্ত ভাবে।

         বসুন্ধরা :
প্রশান্ত এবং প্রশস্ত বসুন্ধরা উত্তম আবাসিক এলাকা হিসেবে জনপ্রিয় সবার নিকটে। শহর থেকে দূরে ছায়াঘেরা, খোলামেলা  এবং শান্ত পরিবেশের কারণেই এটি অধিকমাত্রায় জনপ্রিয়। এই আবাসিক এলাকা যেমনি ভাবে সেরা হিসেবে বিবেচিত তেমনিভাবে এর শিক্ষাব্যবস্থা ও অসাধারণ।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে প্রসিদ্ধ এই এলাকাটি দেশের সর্ব উচ্চমানের স্কুল কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় এর জন্য খ্যাত। ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকা ভিকারুন্নেসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ একটি আদর্শ এবং পরিচিত সবার নিকটে।  দেশের উচ্চ স্থানীয় তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান এই বসুন্ধরাতেই। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এবং আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ছাড়াও রয়েছে অনেক অনেক স্কুল কলেজের সমাহার এখানে।

উৎকৃষ্ট চিকিৎসার ক্ষেত্রে বসুন্ধরার ঝুড়ি নেই,  কেননা এতে রয়েছে অ্যাপোলোর মত হসপিটাল। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এর অবস্থান বসুন্ধরার কাছেই যার ফলে  বিদেশিদের ভিড় দেখা যায় এই অঞ্চলে। ব্যবসায়ী সমাজ ও অনেক বড় এখানের। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় শপিং মল হিসেবে খ্যাত যমুনা ফিউচার পার্কের অবস্থান হলো বসুন্ধরাতেই। যে শপিংমলে না পাওয়ার মত কিছুই নাই।

যোগাযোগ ব্যবস্থার কথা উঠলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচিতি ছাড়াও রয়েছে কুড়িল ফ্লাইওভার, পূর্বাচল ৫০০ফিট যেটি নিকুঞ্জের কাছাকাছি।

উৎকৃষ্ট সব চাহিদার অবস্থান থাকার কারণেই এই অঞ্চল বসবাসের জন্য অন্যতম উপযোগি অঞ্চল। যেখানে বসবাস এর জন্য উত্তম সুবিধা ও ব্যবস্থা রয়েছে।

          বনশ্রী :
রাজধানীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এলাকাগুলোর মধ্যে বনশ্রী পিছনে নেই। এটির জনপ্রিয়তা নেহাত অংশে কম না। ধাপে ধাপে ব্লকে ব্লকে সাজানো গোছানো জায়গাটি উন্নত পরিকল্পনার মাধ্যমেই গড়ে উঠেছে। এলাকাটি হাতিরঝিলের সঙ্গে এবং বাণিজ্যিকভাবে বিখ্যাত একটি জায়গা এটি। আধুনিক সকল কিছুর সুব্যবস্থা এই অঞ্চলে,  উচ্চতর পর্যায়ের স্কুল কলেজের খ্যাত এই ভূমি। নবদম্পতিদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবেও এটিকে ধরা হয়।

             নিকুঞ্জ :
আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং খিলক্ষেত অঞ্চল নিয়ে ঢাকার একপার্শে দাঁড়িয়ে আছে নিকুঞ্জ। কোলাহলমুক্ত স্থানের মধ্যে নিকুঞ্জ অন্যতম, শহর থেকে দূরে হওয়াতেই মূলত এটি এত সুন্দর শহর। এয়ারফোর্টে রোড হওয়ায় এবং ঢাকার সাথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেই এটি এত জনপ্রিয় এলাকা। এই এলাকার ভবনগুলো পরিকল্পনার মাধ্যমে সাজানো এবং সুন্দর।

আবাসিক স্থান হিসেবে নিকুঞ্জের জুড়ি নেই। কোলাহল মুক্ত একটি শান্ত পরিবেশ সবাই পছন্দ করে। তাই এই জায়গাটির ও চাহিদা বেশি সবার নিকটে। এমন সব জায়গার সন্ধানেই থাকে মানুষ বসবাসের জন্য উপযুক্ত জায়গা হিসেবে এমন জায়গাকেই বেছে নেয় সকলে।
দূষিত বাতাসহীন,  খোলামেলা শহর গুলোর অন্যতম হলো নিকুঞ্জ।  এই ভূমির সবকিছুই সাজানো গোছানো, আকর্ষণীয়  ভবন গুলো দেখে মানব হৃদয়ে আগ্রহের সৃষ্টি হয় এখানে থাকার বা  অবস্থান করার। কারণ সবাই খুঁজে সুন্দর এবং শান্তিময় স্থান। তাই ব্যস্ত শহরের কোলাহল থেকে যানজট থেকে এমন এলাকাকেই নির্বাচন করে তারা। যেখানে শান্ত পরিবেশ বিরাজ করে, শান্ত আবহাওয়া গান শোনায়। শান্ত প্রকৃতি মনে মনে অনেক কিছু বলে যায়।

        মিরপুর :
রাজধানীর আবাসন প্রকল্পের আওতাভুক্ত হলো মিরপুর। আবাসন প্রকল্পের আওতাভুক্ত হওয়ায় এটি আবাসিক হিসেবেই বিবেচিত।  এই আবাস্থল বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিনোদন কেন্দ্র নিয়ে গড়ে উঠেছে।

এই স্থানে উল্লেখযোগ্য বিনোদন কেন্দ্রগুলো হলো মিরপুর ডিওএইচেস, শেরে বাংলা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠ, বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বিউপি।

একজন মানুষ যদি একটি সুন্দর জীবন পেতে চায় অথবা সুন্দর জীবনযাপন করতে চায় মিরপুর তার পছন্দের যায়গা গুলোর একটি হতে পারে। এই অঞ্চল তাকে প্রিমিয়াম জীবন উপহার দিতে প্রস্তুত।

          আজিমপুর :
এটা বসবাসযোগ্য তথা আবাসিক এলাকা গুলোর একটি। উচ্চবিত্তদের জন্য লাক্সারিয়াস অ্যাপার্টমেন্ট যেমনি আছে তেমনি ব্যাচেলর এবং ছাত্রছাত্রীদের জন্য অল্পমূল্যে বা সুলভ বাসাভাড়ার ব্যবস্থা ও রয়েছে।

শিক্ষা চিকিৎসা সাহিত্যের মিলনস্থল হিসেবে খ্যাত হলো আজিমপুর।  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল,   বুয়েট এর মত প্রতিষ্ঠানের স্থান এই অঞ্চলে। তাছাড়াও রয়েছে অনেক উচ্চতর মানের কোচিং সেন্টার। সুপরিচিত নিউ মার্কেটের অবস্থান ও এই অঞ্চলে।  নীলক্ষেতের মত বিখ্যাত বই মার্কেট ও রয়েছে এই আজিমপুর। আজিমপুর তার সর্ববৃহৎ  কবরস্থানের জন্য খ্যাত বা পরিচিত।

           মোহাম্মাদপুর :
স্বাচ্ছন্দ্য এবং সর্ব সুবিধা গ্রহণের স্থান হলো মোহাম্মাদপুর। সর্বস্তরের মানুষজনের জন্য সুপরিকল্পিতভাবে আবাসিক এলাকাটি তৈরি করা হয় ১৯৫৪ সালের দিকে।

মোহাম্মদপুরের উল্লেখযোগ্য স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে অ্যাপার্টমেন্ট জোন জাপান গার্ডেন সিটি, মোহাম্মাদিয়া হাউজিং সোসাইটি,  বায়তুল আমান হাউজিং সোসাইটি,  চান মিয়া হাউজিং, কাদেরাবাস হাউজিং।  এ চমৎকার প্রকল্পগুলো মানুষদের কে সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন।

আবাসিক অঞ্চল বা এলাকা হিসেবে  মোহাম্মাদপুর এলাকা একটি আদর্শ এবং উত্তম এলাকা। এই স্থানটি সর্বজনিন এলাকা হিসেবে খ্যাত।  মোহাম্মাদপুরে যারা বাড়ি খুঁজছে বসবাস করার জন্য এটি তাদের জন্য উত্তম গন্তব্য।

মোহাম্মাদপুরে কিছু প্রাচীন উল্লেখযোগ্য স্কুল রয়েছে যা উচ্চতর পর্যায়ের। মোহাম্মাদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, মোহাম্মাদপুর সরকারি  কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মত উচ্চতর পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মোহাম্মদপুরের মর্যাদা আরো বেশি বৃদ্ধি করে রেখেছে।

স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রেও মোহাম্মাদপুর একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সরকারি বেসরকারিভাবে অনেক অনেক চিকিৎসাকেন্দ্র এবং স্বাস্থ্যসেবাগুলো মানুষদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছে দিনের পর দিন। আর ধানমন্ডি এলাকার নিকটে হওয়ায় ধানমন্ডির সকল সুযোগ ভোগ করতে সুবিধা হয়। ধানমন্ডির হাসপাতাল, স্কুল সব ব্যবস্থাই উল্লেখযোগ্য।

           ইস্কাটন :
ইস্কাটন এক আভিজাত্য পূর্ণ এলাকা এটি দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে থেকেই ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে বিবেচিত।  অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক কারণে এটি উল্লেখযোগ্য এক স্থান। রমনা পার্ক হাঁটার দূরত্বের অবস্থান মাত্র। মানুষ পায়ে হেঁটেই রমনা পার্কে গিয়ে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে।

             ওয়ারী :
ওয়ারী হলো আভিজাত এক পুরনো  এলাকা।  এটি পুরান ঢাকায় পড়ে। এতে রয়েছে নান্দনিক কারুকার্যের সব ভবন। ভবনগুলো প্রাচীনের ইতিহাসের পরিচয় বহন করে থাকে।  এটি অন্যান্য সকল অঞ্চল থেকে আলাদা ধরণের।

ঐতিহাসিক বলদা গার্ডেন, বৃহত্তম খ্রিস্টান কবরস্থান,  বুটিক শপ, ফ্যাশন হাউজসহ বিখ্যাত সব রেস্তোরাঁ এবং স্থান নিয়েই এই ওয়ারী।  যেখানে মানুষেরা সময় কাটাতে পারে, পুরনো সব স্থানের সাথে ঐতিহ্যের অবস্থা দেখতে পারে জানতে পারে।

             বেইলি রোড :
বেইলি রাস্তা যেমনিভাবে জনপ্রিয় তেমনিভাবে বহুমুখী অঞ্চল হিসেবে ও পরিচিত। ঢাকায় ফাস্টফুড, রেস্তোরাঁ এবং আকাশচুম্বি বাড়ি তৈরির  প্রবণতা এই বেইলি রোড থেকেই যায়।
জনপ্রিয় কনবেনশন হল অফিসার্স ক্লাবসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার স্থান এই বেইলি রোড। বেইলি রোড একটি প্রাচীন স্থান হওয়াতে এখানে মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে পারে।

          উত্তম বাসস্থান লালমাটিয়া :
ঢাকার প্রাচীন এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম সুন্দর এলাকা হলো লালমাটিয়া।  আঁকাবাঁকা সরু পথ, প্রাচীন ভবন এবং লাল ইটের কারণেই এটি প্রসিদ্ধ এলাকা। যদিও বর্তমানে পুরনো বাড়ি উঠিয়ে তথা পুরনো বাড়ির জায়গায় নতুন দালান স্থাপন করা হচ্ছে। লাল মাটির অঞ্চল  হওয়ায় এটির নাম লালমাটিয়া রাখা হয়েছে।

অধিকমাত্রার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত অঞ্চল লালমাটিয়া একটি প্রাচীন অঞ্চল। যেটি বসবাসযোগ্য জায়গা গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম জায়গা। প্রাচীন এই স্থানে পরিবার নিয়ে বসবাস করার জন্য অনেক অনেক সুবিধা নিহিত রয়েছে। শিশুদের জন্য খেলার মাঠ ও রয়েছে যা অন্যান্য শহরগুলোতে খুব কমই দেখা যায়। এখানের স্কুল কলেজের জন্য ও লালমাটিয়া প্রসিদ্ধ,  বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ও লালমাটিয়ার পরিচয় বহন করে আসছে যুগের পর যুগ ধরে।  প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি হলো লালমাটিয়া মহিলা কলেজ এবং অন্যটি হলো  লালমাটিয়া ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়। 

Subscribe
Notify of
guest

0 Comments
Oldest
Newest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments